ডুলাহাজারায় বালু খেকোদের থামানো যাচ্ছে না

নিজস্ব প্রতিবেদক।

চকরিয়ার ফাঁসিয়াখালী রেঞ্জের আওতাধীন পাগলির বিল সংরক্ষিত বনাঞ্চল ও বগাচতর – মেধাকচ্ছপিয়া মৌজায় বালু খেকোদের দৌরাত্ম কিছুতেই থামানো যাচ্ছে না। মানছে না প্রশাসন, বন বিভাগের কোন বাধা।চিহ্নিত প্রভাবশালী বালু খেকো চক্র সুযোগ পেলেই বালি উত্তোলন করে ট্রাকে করে অন্যত্র পাচার করছে। শুধু তাই নয়-সরকারী নিলাম পরবর্তী আইনের মারপ্যাচে আটকে যাওয়া স্তুপাকৃত বগাচতর-মেধাকচ্ছপিয়া মৌজার বৈধ বালিও গায়ের জোরে সরিয়ে ফেলছে প্রভাবশালী চক্রটি। 

এদিকে প্রকাশ্য-দিবালোকে ট্রাক ভর্তি করে বালু পাচারকালে বন বিভাগ হানা দিয়ে বালু ভর্তি ট্রাকসহ ২ জনকে আটক করেছে। ৩ মার্চ দুপুর ১২ টায় ফাঁসিয়াখালী রেঞ্জাধীন ডুলাহাজারা বিটের ৫৭ নম্বর পাগলির বিল সংরক্ষিত বনাঞ্চলে বন বিভাগ এই অভিযান পরিচালনা করে। আটক ২ জন হলো-ডুলাহাজারা শাহ সুজাপুর গ্রামের নাছির উদ্দিনের পুত্র হেলাল উদ্দিন (২৮), অলি বাপেরজুম গ্রামের মোহাম্মদ ইলিয়াসের পুত্র নুরুল কবির (৩৬)। আটক দু’জনকে চকরিয়া সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট বন আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

এদিকে অভিযানে নেতৃত্ব দেয়া ডুলাহাজারা বন বিট কর্মকর্তা অবনী কুমার রায় ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, ডুলাহাজারার পাগলির বিল সংরক্ষিত বনাঞ্চলে ২০১৫ সালের সৃজিত গাছ অপসারণ করে গর্ত করে বালু উত্তোলন করছে ডুলাহাজারার একটি প্রভাবশালী বালি সিন্ডিকেট। খবর পেয়ে বনবিভাগ দ্রুত অভিযানে নামে। এসময় ঘটনাস্থল থেকে বালি ভর্তি ট্রাকসহ ২ জনকে আটক করি। পরে আটক ২ জনকে আদালতে সোপর্দ করি। আদালত তাদের জামিন না মঞ্জুর  করে জেল হাজতে প্রেরণ করে।

এদিকে বিগত বছর প্রশাসন ও বনবিভাগের যৌথ অভিযানে জব্দকৃত, পরবর্তীতে প্রকাশ্যে নিলামে দেয়া বিপুল পরিমাণ বালির এখনো কোন সুরাহা করতে পারেনি সংশ্লিষ্ট প্রশাসন। ২০২২ সালের ২১সেপ্টেম্বর জব্দ কৃত বালির প্রকাশ্য নিলামে সর্বোচ্চ ডাককারী সাইফুল ইসলাম পুতু অভিযোগ করেন, চকরিয়া উপজেলা প্রশাসনের মাধ্যমে জব্দ কৃত বালি সর্বোচ্চ ১০ লাখ টাকা রাষ্ট্রীয় কোষাগারে  জমা দিয়ে নিলাম খরিদ করি। কিন্তু বালি মহালে যাওয়ার আগেই ২০২২ সালের ২৭ সেপ্টেম্বর বনবিভাগের দায়ের করা মিথ্যা মামলায় আমি কারাগারে যাই। প্রায় একমাস পর কারাগার থেকে বের হয়ে আমার নিলাম খরিদের বালি ফেরত চাইলেও চকরিয়া ইউএনও সেই সুযোগ দিচ্ছেন না। এখন আমার ১০ লাখ টাকার কী হবে? এর বিরুদ্ধে প্রতিকার চেয়ে হাইকোর্টে  আমি রিট পিটিশন দায়ের করি। কিন্তু চকরিয়ার ইউএনও সত্যটি বলছেন না।

বালি ব্যবসায়ী সাইফুলের অভিযোগের ব্যাপারে জানতে চাইলে চকরিয়া ইউএনও জেপি দেওয়ান বলেন, ডুলাহাজারার বগাচতর-মেধাকচ্ছপিয়া মৌজায় ইতোপূর্বে জব্দকৃত বালির নিলাম ডাককারী সাইফুল বিষয়টি নিয়ে মহামান্য হাইকোর্ট রিট পিটিশন দায়ের করেছেন। পুরো বিষয়টি আমি  মহামান্য হাইকোর্টকে অবহিত করেছি। সুতরাং এ ব্যাপারে আমার কোন বক্তব্য নেই।

Comments (০)
Add Comment