ওষুধ খাওয়ার নিয়ম নিয়ে বিস্তারিত জানুন

ওষুধ খেলেই ভালো হয়ে যাব, এমন ধারণা ঠিক নয়। কারণ ভুল নিয়মে ওষুধ গ্রহণের ফলে হিতে বিপরীত হতে পারে। ওষুধ গ্রহণের নিয়ম নিয়ে বিস্তারিত জানিয়েছেন অধ্যাপক ডা. শুভাগত চৌধুরী, সাবেক অধ্যক্ষ, চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ

ওষুধ গ্রহণে হেরফের হলে অনেক সময় প্রত্যাশিত ফল পাওয়া কঠিন হয়। তাই এ ব্যাপারে চারটি নিয়ম মানা খুব জরুরি।

  • প্রতিদিন ব্যবস্থাপত্রে নির্দেশিত ওষুধ একই মাত্রায় একই সময় গ্রহণ করতে হবে।
  • কোনো বেলার ওষুধ বাদ দেওয়া যাবে না, বা অর্ধেক খাওয়া যাবে না।
  • ব্যবস্থাপত্রে নির্দেশিত সময় বা কাল পর্যন্ত ওষুধ গ্রহণ করতে হবে। নিজে থেকে ওষুধ খাওয়া বন্ধ করা যাবে না। অনেকে একটু ভালো বোধ করলে অ্যান্টিবায়োটিক বা প্রেশারের ওষুধ বা ডায়াবেটিসের ওষুধ গ্রহণ নিজে থেকে বন্ধ করেন, যা মারাত্মক পরিণতি ডেকে আনে।
  • অন্য ব্যক্তির জন্য ব্যবস্থাপত্র দেওয়া ওষুধ গ্রহণ করা যাবে না। ডাক্তারের নির্দেশমতো ওষুধ গ্রহণ খুব জরুরি।

যখন-তখন ব্যথার ওষুধ নয়

জ্বর ১০১-এর বেশি না হলেও নাপাজাতীয় ওষুধ খান অনেকে। ব্যথা কমানোর ওষুধ মাত্রা ছাড়া দীর্ঘদিন গ্রহণে কিডনি আর লিভারের মারাত্মক ক্ষতি হতে পারে। অনেক সময় কিডনি বিকল হয়। তাই প্যারাসিটামল বেশি খাওয়ার চেয়ে ব্যথা সহ্য করা উত্তম। যদি বাধ্য হয়ে খেতেই হয়, তবে ওষুধ ভরা পেটে খাওয়া ভালো।

পানি দিয়েই ওষুধ খান

শুধু পানি দিয়ে ওষুধ গ্রহণ বিধেয়। অনেকে চা বা জুসের সঙ্গে ওষুধ সেবন করেন যা ক্ষতিকর। চায়ে আছে ক্যাফেইন, ট্যানিন তাই এসব রাসায়নিক ওষুধের সঙ্গে মিলে ওষুধের কার্যকারিতা কমিয়ে দেবে আর জুসের সঙ্গে খেলে ওষুধের কার্যকারিতা কমে। শরীরের ওষুধ শুষে নেওয়ার ক্ষমতা খর্ব হয়। জুস খেতে হলে আগে বা পরে পান করতে হবে। ওষুধের সঙ্গে নয়।

করণীয়

  • খাওয়ার অন্তত ১০ মিনিট আগে ওষুধ খাবেন। দুই মিনিট আগে নয়।
  • অনেকে একটু সুস্থ বোধ করলে ছেড়ে দেন ওষুধ, কিন্তু এতে ভয়ানক ক্ষতি হয়। জীবাণু দুর্বল হলে ভালো বোধ করে মানুষ। এর অর্থ এই নয় যে, শরীর সুস্থ হয়েছে। এতে যে ক্ষতি তা হলো জীবাণু হয় ওষুধ প্রতিরোধী। পরে এর সংক্রমণ হলে সেই ওষুধে কাজ হয় না। তাই কোর্স সম্পূর্ণ করতেই হবে।
  • ভিটামিন সাপ্লিমেন্ট খালি পেটে খাওয়া যাবে না। ভরপেটে খেতে হবে।

এভাবে ওষুধ গ্রহণের নিয়ম মেনে চললে ওষুধের ফলাফল পূর্ণভাবে পাওয়া সম্ভব।

Comments (০)
Add Comment