ঈদের ছুটিকে কেন্দ্র করে আবারও পর্যটক বরণে প্রস্তুত পর্যটন শহর কক্সবাজার। এখন পর্যন্ত আশানুরুপ হোটেল বুকিং না হলেও হোটেল মালিকদের প্রত্যাশা, ঈদ পরবর্তী ১০ দিনে প্রতিদিন অন্তত এক লাখ পর্যটক কক্সবাজার অবস্থান করবেন। এতে সামগ্রিক পর্যটন খাতে বাণিজ্য হবে কয়েকশো কোটি টাকার। ভ্রমনরত পর্যটকদের সব ধরনের নিরাপত্তা দিতে প্রস্তুত থাকার কথা জানিয়েছে স্থানীয় প্রশাসন।
হোটেল বীচ ভিউ এর ব্যবস্থাপক মো: মিজানুর রহমান বলেন, ‘আমরা আশা করছি ঈদের পরের ১০ দিন ভাল ব্যবসা করতে পারবো। বেশ কিছুদিন কক্ষ ফাঁকা ছিল। তবে এরই মধ্যে পর্যটকরা সাড়া দিতে শুরু করেছেন এবং তাদের প্রত্যাশিত সেবা নিশ্চিত করতে আমরা প্রস্তুত রয়েছি।’
বৃহত্তর বীচ ব্যবসায়ী মালিক সমিতির সভাপতি আব্দুর রহমান বলেন, ‘গত প্রায় দুই মাস ধরে কক্সবাজার সৈকতজুড়ে ছিলোনা খুব বেশি পর্যটকের আনাগোনা। পাঁচ শতাধিক হোটেলমোটেল ও গেস্টহাউস ছিলো প্রায় ফাঁকা। এতে পর্যটন সংশ্লিষ্ট ছোট-বড় সব ব্যবসায়ীরা অর্থ কষ্টে পড়লেও ঈদের ছুটিতে প্রচুর পর্যটকের সমাগম হবে বলে প্রত্যাশা করছি। চাঙ্গা হবে হোটেল-রেস্তোঁরা, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, পরিবহন খাতসহ সামগ্রিক পর্যটন খাত।’
কক্সবাজার হোটেল-মোটেল গেষ্ট হাউস মালিক সমিতির সভাপতি আবুল কাসেম সিকদার বলেন, ‘কক্সবাজারের হোটেল-মোটেলগুলোতে বর্তমানে খুবই খারাপ অবস্থা চলছে। এখন পর্যন্ত অধিকাংশ হোটেলে ২০ শতাংশ কক্ষও অগ্রিম ভাড়া হয়নি। তবে বিগত কয়েক বছরের অভিজ্ঞতার নিরিখে আমরা বলতে পারি, ঈদ পরবর্তী ১০ দিনে কক্সবাজারে প্রতিদিন প্রায় এক লাখ পর্যটক কক্সবাজারে অবস্থান করবেন। এতে সামগ্রিক পর্যটন খাতে বাণিজ্য হবে কয়েকশো কোটি টাকার।’
তিনি বলেন, ‘বর্ষা মৌসুম যেহেতু শুরু হয়েছে, এবার পর্যটকরা ভ্রমনে এসে বর্ষার নান্দনিক কক্সবাজারকে দেখতে পাবেন এবং নি:সন্দেহে এর সৌন্দর্য্যে বিমোহিত হবেন। ‘
ট্যুরিস্ট পুলিশ কক্সবাজার জোনের সহকারী পুলিশ সুপার শেহরিন আলম বলেন, ‘পর্যটকদের সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে প্রস্তুত ট্যুরিস্ট পুলিশ। পর্যটকরা যাতে নির্বিঘ্নে সর্বত্র ঘুরে বেড়াতে পারেন সেজন্য টুরিস্ট পুলিশ সব সময় সজাগ দৃষ্টি রাখবে। নির্ধারিত পোশাকের পাশাপাশি সাদা পোশাকে টুরিস্ট পুলিশ সদস্যরা দায়িত্ব পালন করবেন। আমরা পর্যটকদের কাছে একটি নির্বিঘ্ন ও আনন্দময় ঈদ উপহার দিতে চাই। ‘
কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মোঃ আবু সুফিয়ান বলেন, ‘আমরা জানি প্রত্যেক ছুটিতে কক্সবাজার বিপুল সংখ্যক পর্যটকের সমাগম ঘটে। সে কারণে আমাদের পর্যটন এলাকায় দায়িত্ব পালনের জন্য তিনজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে ভিজিলেন্স টিম গঠন করা হয়েছে। এছাড়া প্রত্যেকে উপজেলাতে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে ভিজিলেন্স টিম নিয়োগ করা হয়েছে। তারা ঈদের ছুটির সময় দায়িত্ব পালন করবেন। এর বাইরে আমরা আরো একটি ভিজিলেন্স টিম গঠন করেছি যাতে পর্যটকরা নির্বিঘ্নে কক্সবাজার আসতে পারে এবং কোথাও যাতে কোন ধরনের যানজট সৃষ্টি না হয়। মহাসড়কেও যাতে কোন অবৈধ যানবাহন চলাচল করতে না পারে। এই সার্বিক ব্যবস্থাপনাটা যদি আমরা করতে পারি, তাহলে পর্যটকদের জন্য নির্বিঘ্ন ও হয়রানিমুক্ত একটি ঈদ আমরা শেষ করতে পারবো।’