গোলাম আজম খান,
দেশে সব নিত্যপণ্যের দাম যখন ঊর্ধ্বমুখী ঠিক তখন, এক সপ্তাহের মধ্যে অস্বাভাবিকভাবে উৎপাদিত লবণের দরপতন হয়েছে। মণপ্রতি লবণের দাম ছিল ৪৫০ টাকা থেকে ৫০০ টাকা। হঠাৎ করে কমে এখন বিক্রি হচ্ছে ৪৩৪০ থেকে ২৬০ টাকায়।
এ অবস্থায় উৎপাদন খরচ না পাওয়ায় চরম অসন্তোষ বিরাজ করছে মাঠ পর্যায়ে। লবণ চাষীরা বলছেন, মিল সিন্ডিকেটের কারণে লবণের দরপতন ঘটেছে। চিহ্নিত কিছু রাঘব বোয়াল তাতে জড়িত।
লবণের ন্যায্য মূল্য নিশ্চিত না করলে সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন হবে মনে করছে স্থানীয়রা। মাঠ ছেড়ে যাবে লবণ চাষীরা।
লবণচাষীদের দাবি, মাঠে মণপ্রতি ৪৫০ থেকে ৫০০ টাকা মূল্য নির্ধারণ করতে হবে। না হলে তাদের পোষাবে না। তাদের মাঠে টিকে থাকা দায় পড়বে।
বিসিক জানায়, চলতি মৌসুমে (১৫ নভেম্বর থেকে ১৫ এপ্রিল পর্যন্ত পাঁচ মাস) জেলার টেকনাফ, কুতুবদিয়া, পেকুয়া, কক্সবাজার সদর, ঈদগাঁও, মহেশখালী, চকরিয়া ও বাঁশখালী উপজেলায় ৬৬ হাজার ২৯১ জমিতে ২৩ লাখ ৮৫ হাজার মেট্রিক টন লবণ উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে। গত মৌসুমে কক্সবাজারের ৬৩ হাজার ২৯১ একর জমিতে লবণ উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল ২৩ লাখ ৫৭ হাজার মেট্রিক টন। কিন্তু প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হয়নি। তখন লবণ উৎপাদন হয়েছিল ১৮ লাখ ৩১ হাজার ৯৩১ মেট্রিক টন। এবার তিন হাজার একর জমিতে লবণ উৎপাদন বাড়ছে, এ কারণে উৎপাদনও বাড়বে।
এদিকে, অসাধু মিল মালিক সিন্ডিকেটের ষড়যন্ত্র বন্ধ ও দেশীয় লবণের ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত করার দাবি দিয়েছে কক্সবাজার লবণচাষী ও ব্যবসায়ী সংগ্রাম পরিষদ।
কক্সবাজার লবণচাষী ও ব্যবসায়ী সংগ্রাম পরিষদের সভাপতি মকছুদ আহমদ কোম্পানির সভাপতিত্বে চকরিয়ার একটি কনভেনশন হলে জরুরি সভা অনুষ্ঠিত হয় গত শুক্রবার। উক্ত জরুরি সভায় জেলা পরিষদ সদস্য আবু তৈয়ব, বদরখালি ইউপি চেয়ারম্যান নুর হোছাইন আরিফ, সাবেক চেয়ারম্যান শাহাবুদ্দিন লবণ ব্যবসায়ী মৌলভী শহিদুল ইসলাম, জামিল ইব্রাহিম চৌধুরী, মিজানুর রহমান চৌধুরী, সরওয়ার আলম, সাবের আহমদ, দলিলুর রহমান, আনিছুর রহমান, মৌলবী সেলিম উদ্দিন, জাফর আলম এমইউপি, সিরাজুল মোস্তফা, নজরুল ইসলাম, নুরুন্নবী, শামসুল আলম, রমজান আলি, আলি হোছাইন, ফজল কাদের, রমজান আলী, আজম, নুরুল ইসলাম চৌধুরী, আবুল হোছাইন, নজরুল ইসলাম, নুরুল আজম, মুজিবুল হক, এখলাছুর রহমান, শামসুল আলম, আবদুল খালেক, রফিকুল ইসলাম, আমির হোছাইন, মিজবাহ, হারুনর রশিদ, মোহাম্মদ সোয়াইবুল ইসলাম সবুজসহ সংশ্লিষ্টরা উপস্থিত ছিলেন।
হঠাৎ লবণের দরপতনের সভায় ক্ষোভ প্রকাশ করা হয়।
দেশীয় বাজার ধ্বংস করতে যারা ষড়যন্ত্র করছে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তি দাবি সর্বস্তরের লবণচাষিদের।
ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত না হলে অচিরেই লবণ সরবরাহ বন্ধের সিদ্ধান্ত হচ্ছে বলে জানিয়েছেন সমিতির সভাপতি মকছুদ আহমদ কোম্পানি।
তিনি বলেন, দুই সপ্তাহ আগে মাঠে ছিল মণপ্রতি ৫০০ টাকা। মিল পর্যায়ে ৫৭০ টাকা। বর্তমানে মাঠে ২৬০ টাকা। মিলে ৩৪০ টাকা। হঠাৎ এমন দরপতন মেনে নেওয়া যায় না। ন্যায্যমূল্য না পেলে লবণ সরবরাহ বন্ধ করে দেওয়া হবে।