নিজস্ব প্রতিনিধি,টেকনাফ
কক্সবাজারের টেকনাফে ‘মুক্তিপণের দাবিতে’ দ্বিতীয় শ্রেণি পড়ুয়া মোহাম্মদ হোছাইন সূর্য নামের এক স্কুলছাত্রকে অপহরণ করেছে দুর্বৃত্তরা।
অপহরণকারীরা মোবাইল ফোনে ওই স্কুলছাত্রকে ছেড়ে দিতে ৩০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করেছে বলে ভুক্তভোগী পরিবার অভিযোগ জানিয়েছে।
টেকনাফ থানার ওসি মো. আব্দুল হালিম জানান, রোববার দুপুরে টেকনাফ উপজেলার হ্নীলা ইউনিয়নের লেদা এলাকায় এ ঘটনা ঘটেছে।
অপহৃত মোহাম্মদ হোছাইন সূর্য (৮) টেকনাফ উপজেলার হ্নীলা ইউনিয়নের লেদা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দ্বিতীয় শ্রেণির ছাত্র। সে টেকনাফের লেদা এলাকার সোলতান আহমেদের ছেলে।
অপহৃত স্কুলছাত্রের বাবা সোলতান আহমেদ বলেন, রোববার সকালে বাড়ি থেকে অন্য সহপাঠীদের সঙ্গে স্কুলে যায় মোহাম্মদ হোছাইন। দুপুরে স্কুল ছুটির পর অন্য সহপাঠীরা বাড়ি ফিরলেও সে ফিরেনি। পরে স্বজনরা বিভিন্ন জায়গায় খোঁজ নিয়েও তার সন্ধান পাননি।
তিনি বলেন, রোববার রাতেই দুর্বৃত্তরা মোবাইল ফোনে জানায় আমার ছেলেকে অপহরণ করা হয়েছে। তাকে ছেড়ে দিতে দুর্বৃত্তরা ৩০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে। এ সময় মুক্তিপণ না দিলে সূর্যকে জ্যান্ত পুড়িয়ে মারার হুমকিও দেওয়া হয়।
পরে এ বিষয়টি পুলিশসহ আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর সংশ্লিষ্টদের কাছে অবহিত করা হয়েছে বলে জানান ভুক্তভোগী বাবা।
টেকনাফ থানার ওসি মো. আব্দুল হালিম বলেন, রোববার রাতে ভুক্তভোগী স্কুলছাত্রের বাবা তার ছেলে নিখোঁজ দাবি করে সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন। এ ব্যাপারে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
তবে অপহৃতকে ছেড়ে দিতে মুক্তিপণ দাবির ব্যাপারে স্বজনদের কাছ থেকে সোমবার সন্ধ্যা পর্যন্ত কোনো ধরনের অভিযোগ পাননি বলে জানান তিনি।
গত আট মাসে টেকনাফে ৭০ জন ব্যক্তি অপহরণের ঘটনা ঘটে। যেখানে গত ২৮ এপ্রিল পাত্রী দেখতে গিয়ে অপহরণের শিকার হন কক্সবাজার চৌফলদণ্ডি উত্তরপাড়ার মোহাম্মদ আলমের ছেলে জমির হোসেন রুবেল, তার দুই বন্ধু ঈদগাঁও উপজেলার জালালাবাদ সওদাগর পাড়া এলাকার মোহাম্মদ ইউছুপ ও কক্সবাজার শহরের নুনিয়াছড়া এলাকার ইমরান।
এছাড়া ২৪ মে টেকনাফ পাহাড়ি এলাকায় অভিযান চালিয়ে তিনটি মরদেহ পাওয়া যায়। এ ঘটনায় দায়ের করা মামলায় চার জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। যারা এখন পুলিশের রিমান্ডে রয়েছেন।
এর মধ্যে গত শুক্রবার লেদা রোহিঙ্গা ক্যাম্প থেকে পাঁচ জনকে অপহরণ করা হয়। গত শনিবার রাতে এক যুবকের হাতের কব্জি কেটে বিচ্ছিন্ন করে ফেলে ওই হাতসহ তাকে ফেরত পাঠায়। অপর চার জনের কাছে ২০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে আসছেন অপহরণকারীরা।